Tuesday, April 15, 2014

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার ৪০ টিপস


সময়ের জনপ্রিয় পেশা ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় কাজ করে, বেশ কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। মনে রাখতে হবে ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে সামনে মোকাবেলা করার মতো অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। এসব বিষয় সমাধানের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে।যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার বিষয়ে চিন্তিত, তাদের কাজে লাগবে এরকম কয়েকটি টিপসঃ
১. নিজের মার্কেটিং করা : নতুন কাজ পাওয়া কিংবা পুরাতন ক্লায়েন্টের কাজ পুনরায় পেতে মার্কেটিং সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। নিজের যোগ্যতাগুলোকে তুলে ধরতে হবে। কখনোই থামা উচিত নয়, এমনকি ব্যস্ত থাকলেও। মনে রাখতে হবে পৃথিবী যোগ্যতাকে সম্মান করে।
২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকা : প্রত্যাশিত ক্লায়েন্ট খুঁজে পেতে ওডেস্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সারের মত মার্কেটপ্লেসগুলোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন কমিউনিটিগুলো অন্যতম মাধ্যম। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেকে আপডেটেড রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৩. নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করা : নিজের একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, যেখানে নিজের এক্সপার্টাইজ এবং কাজের সম্পূর্ণ বিবরণ স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। এতে সুবিধা হলো, ওয়েবসাইটের ছোট একটা লিংক ক্লায়েন্টের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।
৪. দক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করতে ব্লগিং : আপনি যে বিষয়ে কাজ করছেন সেই বিষয়ে নিজেকে অন্যের কাছে দক্ষ এবং জ্ঞানী হিসেবে তুলে ধরতে ব্লগিং একটি দুর্দান্ত উপায়। তাই এই বিষয়ে নিয়মিত ব্লগিং করতে হবে।
৫. কাজের ভালো দিকগুলো জানা : প্রতিটি মানুষই কাজ এবং দক্ষতার দিক দিয়ে অনন্য। আপনার সেই অনন্যতাকে খুঁজে বের করতে হবে। আপনি কোন কাজটায় পারদর্শী সেটা জানা থাকলে কাজ করা এবং নিজের মার্কেটিং করা, দুটো কাজ করতেই আপনার অনেক সুবিধা হবে।
৬. পোর্টফোলিও আপডেটেড রাখা : নিয়মিত আপনার পোর্টফোলিও পর্যালোচনা এবং আপডেটেড রাখতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, আপনার ভালো কাজগুলো যেন সবার আগে প্রদর্শিত হয়।
৭. কথা বলতে শেখা : সবসময় এটা ভাববেন না যে ক্লাইন্ট এসে আপনাকে নক করবে, সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করুন। সুযোগ যদি কড়া না নাড়ে তবে আগে দরজা বানান।
৮. সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের ব্যাপারে রিসার্চ করা : যাদের সঙ্গে কাজ করবেন তাদের সম্পর্কে ভালো করে কিছু না জেনেই কোন ধরণের চুক্তি না করাই ভাল। ক্লায়েন্ট এবং কাজ দুটো সম্পর্কেই আগে জেনে নিতে হবে। নইলে পরবর্তীতে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৯. শুনতে শেখা এবং প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা : ক্লায়েন্ট কি চায় শুধুমাত্র সেটা ধারণা করেই কি করতে হবে সেটা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো। ভাল করে শুনতে হবে সে কি চায়, পরিস্কার ধারণা না পেলে প্রশ্ন করতে হবে।
১০. ভদ্র আচরণ করা : রূঢ় পরিবেশে বাস করলেও সেটি অন্যের কাছে প্রকাশ করা কোনভাবেই উচিত নয়। ভদ্র আচরণ আপনাকে লক্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী করে তুলবে। তাই সবার সঙ্গে ভদ্র আচরণ করতে হবে।
১১. আলোচনা করা : ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে যেকোনো প্রস্তাব বা শর্ত আপনাকে মেনে নিতে হবে তেমন কোনো নিয়ম নেই বা করবেন না। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি একটি চুক্তির সব দিক নিয়ে আলোচনা কিংবা দরাদরি করতে পারেন ।
১২. নিজের সুযোগ তৈরি করা : ক্লায়েন্ট কি চায় সেটা সম্পর্কে আপনি পুরো অবগত থাকবেন। কাজ সম্পর্কে যতটা সম্ভব সুনির্দিষ্ট ধারণা নিয়ে নিতে হবে।
১৩. নিরপেক্ষভাবে কাজের দাম মূল্যায়ন করা : অনেকে কাজ পাননা তাই কম খরচে ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদান করতে চান। কখনোই এটা করবেন না, বরং মানসম্মত কাজ উপস্থাপন করে যথাযথ দাম নির্ধারণ করুন।
১৪. মানা করতে ভয় না পাওয়া : ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে প্রতিটি সুযোগই যে আপনার জন্যে যথাযথ হবে তেমনটি ভাবার কারণে নেই। যদি বুঝতে পারেন কাজটি আপনার জন্য না, তবে কাজটি প্রত্যাখ্যান করতে ভয় পাবেন না। হাতের কাজ ও সময় কতোটা আছে সেটা বিবেচনা করে হ্যাঁ বলুন। মনে রাখবেন, বিনীত হয়ে ‘না’ বলতে পারাও যোগ্যতার একটা অংশ।
১৫. কি কাজ করবেন সেটার লিখিত ব্যাখ্যা চান : কাজ শুরু করার আগে একটি লিখিত চুক্তি করে নিন অথবা কি কি কাজ করবেন সেটার একটা লিখিত নিয়ে নিন।
১৬. বিরক্ত হবেন না : কাজ শুরু করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার কাজের পরিবেশ আপনার কাজের সাথে যাতে সর্বোচ্চ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ কাজের মাঝে মনযোগের বিক্ষেপ ঘটলে কাজটি শেষ করতে বেশি সময় লাগতে পারে কিংবা কাজের মান সম্পর্কে আপনি নিজেই সন্তুষ্ট হতে পারবেন না।
১৭. রুটিন অনুসরণ করা : অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সাররা এটা স্বীকার করেন, তারা যখন কাজের নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করে কাজ করেন তখন তাদের কাজের প্রোডাক্টিভিটি অনেকাংশেই বেড়ে যায়। তাই কাজ করার সময় রুটিন অনুসরণ করুন।
১৮. কাজ করার স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা : নোংরা পরিবেশ আপনার কাজের গতি এবং সাহস অনেকখানি কমিয়ে দেয় যা আপনি হয়তো কখনো বুঝতেও পারবেন না। আপনি যদি অগোছালো প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকুন তবে আজ একদিনের জন্য হলেও কাজের স্থানটি গুছিয়ে তারপর কাজ করুন। বিশ্বাস করুন, পার্থক্যটা আপনি নিজেই টের পাবেন।
১৯. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা : ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফলতা লাভের অন্যতম শর্ত হলো সুস্থ থাকা। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সাররা অসুস্থতার জন্য কাজ করতে পারেন না। আর এই অসুস্থতার অন্যতম বড় কারণ হলো ভুল খাদ্যাভ্যাস। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
২০.ব্যায়াম করা : ব্যায়াম করলে নিজেকে অনেক বেশি ফুরফুরে লাগবে, মনযোগ বাড়বে, আর অনেক সুক্ষ কাজও অনেক দক্ষতার সাথে করতে পারবেন।
২১. মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া : কথাটা হয়তো কান্ডজ্ঞানহীনের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন দীর্ঘ সময় ধরে একনাগাড়ে কাজ করা আপনার প্রোডাক্টিভিটিকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তাই মাঝে মাঝে বিরতি নিন, কাজের মাঝে আনন্দ খুঁজে পাবেন।
২২. প্রত্যাশা পূরণ করা : ক্লায়েন্টকে নিরাশ করবেন না, নির্ধারিত সময়ে কাজ জমা দিন এবং যা দিচ্ছেন তা যেন ক্লায়েন্টের শর্ত পূরণ করে সেটার প্রতি সর্বোচ্চ খেয়াল রাখতে হবে।
২৩. ইনভয়েস পাঠানো : কাজ জমা দিয়েছেন, ক্লায়েন্টকে ইনভয়েস পাঠিয়ে দিন। অপেক্ষা করলে সেটার কথা আপনি কিংবা ক্লায়েন্ট যে কেউই ভুলে যেতে পারেন।
২৪. ধন্যবাদ বলা : থ্যাঙ্কস বলতে পারেন এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। কারো কাছে লক্ষণীয় হয়ে উঠার খুব সহজ একটি উপায় হলো আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ বলতে পারা। তাই ক্লায়েন্টকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করবেন না।
২৫. ফলোআপ করা : অনেক ফ্রিল্যান্সাররা ক্লায়েন্টদের ফলোআপ করতে ভয় পান। কিন্তু মনে রাখবেন, ফলোআপ করা ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
২৬. লক্ষ্য নির্ধারণ করা : আপনার কাজ কতোদূর আগাচ্ছে কিংবা ঠিক পথে আগাচ্ছে কিনা, লক্ষ্য নির্ধারণ ব্যতীত সেটা কখনোই পরিমাপ করতে পারবেন না। তাই যৌক্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যেটা আপনি পূরন করতে পারবেন।
২৭. পরিকল্পনা করা : লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলেছেন? এবার সে লক্ষ্য অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন। প্রয়োজনে করণীয় কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। সময় পেলেই সেটাতে চোখ বুলিয়ে নিন।
২৮. সহযোগির সাহায্য নেওয়া : আপনি ফ্রিল্যান্সিং করেন, তার মানে এই নয় যে সব কাজ আপনাকে একাই করতে হবে। বিশেষ কোন কাজের জন্য অন্যের সাহায্য নিন।
২৯. শেখার জন্য সময় রাখা : কথায় আছে, জানার কোন শেষ নেই, শেখার কোন বয়স নেই। আপনার দক্ষতা ও জ্ঞান আপটুডেট রাখুন। নিয়মিত নতুন কিছু শেখা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অপশনাল নয়।
৩০. ভালো কিছুর জন্য বিনিয়োগ : টাকা খরচ করার একটি উপযুক্ত খাত হলো নিজের জন্য একটা হাই কোয়ালিটি পিসি কেনা, সফটওয়্যার দরকার হলে সেটা কেনা এবং হাই স্পিড ইন্টারনেটের পেছনে খরচ করা। এগুলো অযথা সময় নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাবে এবং কাজ সহজ করবে।
৩১. সঠিক সফটওয়্যারের ব্যবহার : যদিও বেশিরভাগ কাজই ফ্রিওয়্যার টুল দিয়েই হয়ে যায়, কিন্তু কিছু কিছু কাজ করতে আপনাকে হয়তো কিছু সফটওয়্যার বা টুল কিনতে হতে পারে। সেসময় দেখে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন যাতে কাজটি সঠিকভাবে শেষ করতে পারেন।
৩২. সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করা : সাধারণত ফ্রিল্যান্সাররা একাই কাজ করেন কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাহায্যের দরকার পড়ে। সুতরাং বন্ধুত্ব করা কিংবা বজায় রাখা সেটা সম্পূর্নই আপনার উপর নির্ভর করছে।
৩৩. ক্লায়েন্টের মন্তব্য সংগ্রহ করা : পুরাতন কিংবা নতুন ক্লায়েন্টদের সমর্থন কিংবা টেষ্টিমোনিয়াল আপনার মার্কেটিংকে আরও শক্তিশালী করবে। তাই, আপনার সম্পর্কে ক্লায়েন্টের পজিটিভ মন্তব্যগুলোকে আপনার পোর্টফোলিওতে তুলে ধরতে পারেন।
৩৪. নিজের প্রোডাক্ট তৈরি করা : বাড়তি আয়ের জন্যে নিজের কিছু প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারেন। যেমন টেমপ্লেট, ট্রেইনিং মডিউল, ওয়ার্ডপ্রেস থিম, ইবুক এগুলো তৈরি করেও বিক্রি করতে পারেন।
৩৫. ইতিবাচক হওয়া : মনে রাখতে হবে, একজন ফ্রিল্যান্সারের ভালো মনোভাব তার জন্যে অনেক বড় একটা সম্পদ।
৩৬. নিজের উপর বিশ্বাস রাখা : আপনি যদি বিশ্বাস করেন করণীয় কাজটির জন্যে সঠিক ব্যক্তিটি আপনি নন, ক্লায়েন্ট আপনাকে সেটার জন্য যোগ্য ভাববে সেটা কিভাবে আশা করেন?
৩৭. নতুন কিছু করা : এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পাবেন না।
৩৮. অনলাইনে নিজের মতামত বিশ্লেষণ করা : আপনি অনলাইনে যা বলেন কিংবা আপনার সম্পর্কে যা বলা হয় সেটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ, সঠিকভাবে সেটি মেনে চলুন।
৩৯. ভবিষ্যতের জন্যে প্রস্তুত হোন, দুর্দিনের জন্য সঞ্চয় করুন।
৪০. উপরের বিষয়গুলো নিয়মিত দেখুন ঠিকভাবে চলছে কিনা।
সৌজন্যঃ টেকশহর

No comments:

Post a Comment